কাই-স্কোয়ার টেস্ট (Chi-Square Test): নন-প্যারামেট্রিক টেস্ট কিভাবে করবেন এবং আপনার গবেষণায় কাজে লাগাবেন

 কাই-স্কোয়ার টেস্ট (Chi-Square Test): নন-প্যারামেট্রিক টেস্ট কিভাবে করবেন এবং আপনার গবেষণায় কাজে লাগাবেন

১। কাই-স্কোয়ার টেস্ট কি?

কাই-স্কোয়ার টেস্ট হল একটি নন-প্যারামেট্রিক টেস্ট যা ডেটা সেটের মধ্যকার প্রত্যাশিত এবং প্রাপ্ত ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে পার্থক্য মূল্যায়নের জন্য ব্যবহৃত হয়। সাধারণত, এটি নামমাত্র (categorical) ডেটা বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং পরিসংখ্যানিক স্বতন্ত্রতার পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয়।

২। কাই-স্কোয়ার টেস্ট কত প্রকার?

কাই-স্কোয়ার টেস্ট মূলত দুটি রকমের হয়:

  1. Chi-Square Test of Independence: ডেটার দুটি ক্যাটেগরির মধ্যে সম্পর্ক পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।
  2. Chi-Square Goodness of Fit Test: ডেটার ফ্রিকোয়েন্সি প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সির সাথে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ তা নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়।
৩। কাই-স্কোয়ার টেস্টের সূত্র

কাই-স্কোয়ার টেস্টের জন্য ব্যবহার করা হয় নিচের সূত্রটি:

χ2=(OiEi)2Ei\chi^2 = \sum \frac{(O_i - E_i)^2}{E_i}

এখানে,

  • χ2\chi^2
    = কাই-স্কোয়ার ভ্যালু
  • OiO_i
     = প্রাপ্ত ফ্রিকোয়েন্সি (Observed Frequency)
  • EiE_i
    = প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সি (Expected Frequency)

যখন 
χ2\chi^2
মান বড় হয়, তখন প্রাপ্ত এবং প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে পার্থক্য বেশি হয়, যা ইঙ্গিত করে যে ডেটাগুলোর মধ্যে পার্থক্য বা সম্পর্ক বেশি।


৪। কাই-স্কোয়ার টেস্টের ধাপসমূহ কি কি?

কাই-স্কোয়ার টেস্টের ধাপসমূহ কি কি?


৫। একটি উদাহরণ দেওয়া হলো

নিম্নে একটি উদাহরণ দেওয়া হলো যেখানে একটি হ্রদে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কিত কাই-স্কোয়ার টেস্টের প্রয়োগ দেখানো হয়েছে। এই উদাহরণটি প্রদর্শন করে কিভাবে হ্রদের বিভিন্ন সেকশনে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার উপস্থিতি পরীক্ষা করা যায়।

উদাহরণ: একটি হ্রদে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ বিশ্লেষণ

একটি গবেষণায় হ্রদের বিভিন্ন অংশে (উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম) মাইক্রোপ্লাস্টিকের ঘনত্ব পরীক্ষা করা হয়েছে। গবেষকরা পর্যবেক্ষণ করতে চেয়েছেন যে, হ্রদের ভিন্ন অংশগুলিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের পরিমাণ সমান কিনা বা একে অপরের থেকে আলাদা কিনা।

প্রাপ্ত ডেটা:

গবেষণার সময়ে প্রতি সেকশনে ১০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং সেখানে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার উপস্থিতি নথিভুক্ত করা হয়।

হ্রদের সেকশনমাইক্রোপ্লাস্টিক উপস্থিত (হ্যাঁ)মাইক্রোপ্লাস্টিক উপস্থিত (না)মোট নমুনা
উত্তর15520
দক্ষিণ101020
পূর্ব12820
পশ্চিম81220
মোট453580

Step 1: Hypothesis নির্ধারণ

  • H0H_0
  • H1H_1

Step 2: প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সি (Expected Frequency) নির্ধারণ

প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারণের জন্য, আমরা প্রতিটি সেলের জন্য নিম্নলিখিত সূত্রটি ব্যবহার করবো:

E=Row Total×Column TotalGrand TotalE = \frac{\text{Row Total} \times \text{Column Total}}{\text{Grand Total}}

উদাহরণস্বরূপ:

  • উত্তরের জন্য মাইক্রোপ্লাস্টিক উপস্থিত (হ্যাঁ) প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সি:
    E=20×4580=11.25E = \frac{20 \times 45}{80} = 11.25

এভাবে প্রতিটি সেলের প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সি হিসাব করা যাবে।

Step 3: কাই-স্কোয়ার পরিসংখ্যান (
χ2\chi^2
) নির্ধারণ

প্রত্যেক সেলের জন্য (Observed Frequency - Expected Frequency) নির্ণয় করে এবং সেই পার্থক্যগুলোর উপর ভিত্তি করে কাই-স্কোয়ার মান নির্ধারণ করতে হবে।

Step 4: ডিগ্রি অব ফ্রিডম (df) নির্ধারণ

df=(r1)×(c1)=(41)×(21)=3df = (r - 1) \times (c - 1) = (4 - 1) \times (2 - 1) = 3

df=(r1)×(c1)=(41)×(21)=3

Step 5: সিদ্ধান্ত নিন

যদি 
χ2\chi^2H0H_0

৬। ফলাফল ও সিদ্ধান্ত কিভাবে লিখবেন?

যদি কাই-স্কোয়ার টেস্টের ফলাফল প্রমাণ করে যে হ্রদের বিভিন্ন অংশে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের ঘনত্বে পার্থক্য রয়েছে, তবে গবেষকরা সুনির্দিষ্ট এলাকায় দূষণের কারণ অনুসন্ধান করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি দক্ষিণ অংশে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ বেশি থাকে, তবে সেই অংশের কাছাকাছি কোনো শিল্প এলাকা বা প্লাস্টিক বর্জ্যের উৎস আছে কিনা, তা নির্ধারণ করা যেতে পারে।

কাই-স্কোয়ার টেস্ট (Chi-Square Test): নন-প্যারামেট্রিক টেস্ট কিভাবে করবেন এবং আপনার গবেষণায় কাজে লাগাবেন
 চিত্রটি কাই-স্কোয়ার রেসিডুয়াল প্লট, যা প্রত্যাশিত ও প্রকৃত ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে পার্থক্য (residuals) দেখায়। এতে বোঝা যায় হ্রদের কোন সেকশনগুলোতে প্রত্যাশিত থেকে বেশি বা কম মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া গিয়েছে, যা দূষণের স্থানভেদে প্রভাব নির্দেশ করে।

এই উদাহরণটি কাই-স্কোয়ার টেস্টের ব্যবহার দেখায় যেখানে পরিবেশগত ডেটা দিয়ে একটি বিশেষ দূষণ সমস্যার পর্যালোচনা করা হয়েছে।

Post a Comment

0 Comments